মানুষ সব সময় জ্ঞান লাভের প্রতি আগ্রহী। এরকম আগ্রহ থেকে অত্র এলাকার তৎকালীন কিছু উৎসাহী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্ঠায় ১৮১০ সালে ফুলসাইন্দ গ্রামে বর্তমান ২নং ফুলসাইন্দ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অত্র এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রসারে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তী ধাপে ধাপে ১৯৩১ সালে বর্তমান ১নং ফুলসাইন্দ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৯৩৭ সালে বর্তমান পূর্ব ফুলসাইন্দ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪১ সালে এলাকার দরদী ব্যক্তিবর্গের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ইসলামী শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে বর্তমান ফুলসাইন্দ দারুল ক্বেরাত দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসারের জন্য ১৯৬২ সালে ফুলসাইন্দ জুনিয়র বিদ্যালয় নামে বর্তমান ফুলসাইন্দ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরে মহিলাদের জন্য ইসলামী শিক্ষা দানের জন্য ২০০১ সালে পূর্ব ফুলসাইন্দ মহিলা দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়।
এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাকালে যারা সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যে যারা আজ বেঁচে নেই তাদের রুহের মাগফিরাত এবং যারা বেঁচে আছেন তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ূ কামনা করছি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জ্ঞানী, গুণী ব্যক্তিবর্গ ফুলসাইন্দ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ে পদার্পন করে অত্র এলাকায় শিক্ষ প্রসারে সহযোগিতা করেছেন। এসব ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম.এ.জি. ওসমানী ১০/১১/১৯৭২ইং তারিখে ফুলসাইন্দ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ে আগমন করে অত্র এলাকার সুনাম বৃদ্ধি করেন। পরে ১৯৯৭ সালে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ, এম.পি. তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিঠির সভাপতি জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ এম.পি. ১৪/০৩/১৯৯৭ ইং সালে উক্ত প্রতিষ্ঠানে পদার্পন করেন। পরে ২০০৩ সালে সাবেক সচিব ও তৎকালীন প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান জনাব ইনাম আহমেদ চৌধুরী (প্রতিমন্ত্রী) ০১/০৭/২০০৩ইং তারিখে বিদ্যালয়ে শুভাগমন করেন। ২০০৪ সালে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য জনাব ডঃ সৈয়দ মকবুল হোসেন ১৮/০৪/২০০৪ইং তারিখে বিদ্যালয়ে পদার্পন করেন। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর আব্দুর রব ১৮/০৯/২০০৭ইং সালে বিদ্যালয়ে আগমন করেন। ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মহিলা, শিশু ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্ঠা জনাবা রাশেদা কে. চৌধুরী ১৮/০৯/২০০৭ ইং তারিখে বিদ্যালয়ে শুভ আগমন করেন। বর্তমান সরকারের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ এম.পি. ১০/০৩/২০১২ইং তারিখ বিদ্যালয়ে পদার্পন করেন। তাছাড়াও বিশিষ্ট জ্ঞানী, গুণী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সিলেট ৬ আসনের সাবেক এম.পি. গৌছ উদ্দিন ও শরফ উদ্দিন এম.পি. সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ অত্র প্রতিষ্ঠানে আগমন করেন। এই সমস্ত গুণী ব্যক্তিবর্গের আগমনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে অত্র এলাকার শিক্ষার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা আশাবাদী। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ফুলসাইন্দ দ্বী-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় ২০১৩ সালে মহাবিদ্যালয়ে পরিনত হয়। এ অঞ্চলের স্বনামধন্য এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এগিয়ে চলায় সর্বমহলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।